বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে প্রতি বছর যানবাহনের সংখ্যা ক্রমাগত ভাবে বেড়েই চলেছে যার ফলে রাস্তা ঘাটে যানজটের মাত্রাও বাড়ছে। এই যানজট ভরা রাস্তায় তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বাইকের বিকল্প কিছু নেই। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে যত ধরনের বাইক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে ইয়ামাহা বাইকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার; ইয়ামাহা তাদের প্রতিটি বাইকে, সেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যাতে করে বাইকের মান ও গ্রাহকদের ভরসা দুটোই ঠিক থাকে।
শক্তিশালী ইঞ্জিন: ইয়ামাহা বাইকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল শক্তিশালী ইঞ্জিন যার ফলে এদের বাইক লম্বা সময় ধরে সার্ভিস দিতে পারে।
স্টাইলিশ আর সলিড বডি: ইয়ামাহার প্রতিটি বাইক স্টাইল আর ফ্যাশনের একটি প্রতিচ্ছবি। তাছাড়াও এতে রয়েছে সলিড বডি যার ফলে ইয়ামাহা বাইক লম্বা সময় ধরে সার্ভিস দিতে পারে।
পারফর্মেন্স: ইয়ামাহা বাইকের যে বিষয়টি গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে তা হলো এর পারফর্মেন্স। ভালো মাইলেজ, টেকসই আর ভালো সার্ভিস দিতে পারে বলেই এর চাহিদা এতো বেশি।
প্রথমবারের মতো মোটরসাইকেল কিনতে গেলে চিন্তা করতে হয় অনেক কিছুই। তাই ইয়ামাহার যেকোনো বাইক কেনার আগে কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, যেমন;
প্রথমত আপনি কী ধরনের বাইক কিনতে চাচ্ছেন সেটা বিবেচনা করুন। ইয়ামাহা বিভিন্ন রকমের এবং বিভিন্ন প্রাইজ রেঞ্জের স্পোর্টস বাইক, লেডিস বাইক ও পাহাড়ি বাইক বেচে থাকে। প্রতিটি বাইকের রয়েছে নিজস্ব ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য, যেমন:-
এছাড়াও ইয়ামাহা আরও অন্যান্য ধরনের বাইক তৈরি করে। তবে আপনার কেমন বাইক প্রয়োজন কিংবা আপনি কোন কাজের জন্য বাইক খুঁজছেন, সেটা বুঝেই পরের ধাপগুলোতে এগিয়ে চলুন।
ইয়ামাহা বাইক কেনার আগে সর্ব প্রথম যে জিনিস খেয়াল রাখতে হবে তা হল, আপনার বাজেট। বাংলাদেশের বাজারে ইয়ামাহার বাইকের দাম ১৫০০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বাজেটের মধ্যে ইয়ামাহার সেরা বাইক হল YAMAHA SALUTO 125। তবে আপনার বাইক কেনার বাজেট যাই হোক না কেন তার থেকে ৫০০০-১০০০০ টাকা বেশি রাখা উচিত, কারণ বাইকের সাথে বাইকের তালা, কভার ইত্যাদিও কিনতে হয়।
এমনও হতে পারে যে আপনার বাজেটের ভেতর বেশ কয়েকটি বাইক পাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনার বাজেটের মধ্যে থাকা বাইক গুলোর একটা তালিকা তৈরি করুন, এবং পছন্দের মধ্যে সেরা বাইকটির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করুন। তবে বাইক কেনার সময় শুধু মাত্র লুক বা ডিজাইন দেখে নয়, বরং যেই বাইকগুলো বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে, কিংবা আইন অনুযায়ী লিগাল, সেগুলো থেকেই পছন্দের বাইকগুলো তালিকা তৈরি করুন। কারণ অনুমতি নেই এমন বাইক ক্রয় করলে সেটা বাংলাদেশের রাস্তায় চালাতে পারবেন না।
আপনি যেই বাইক কিনতে চাচ্ছেন, সেই বাইক যারা আগে কিনেছে তাদের কাছ থেকে এই বাইক সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন এবং তা যাচাই করুন। যদি আপনি আপনার তালিকায় এমন কোন বাইক রাখেন যেই বাইকটা আপনার কোন বন্ধু বা আত্নীয়োর কাছে আছে তাহলে আপনি তার কাছে থেকে সেই বাইকের পারফর্মেন্স, স্পেয়ার পার্টস এর দাম ও সার্ভিসিং পয়েন্ট এর সর্ম্পকে খোঁজ নিন। সম্ভব হলে সেই বাইকের একটি টেস্ট ড্রাইভ নিন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করে নিন।
ইয়ামাহার যেকোনো বাইক ক্রয় করার আগে, সেই বাইকের মাইলেজ জেনে নিন। সাধারণত যত বেশি সিসির বাইক কিনবেন তত কম মাইলেজ, মানে দ্রুত গতির বাইক হলে সেটা তেলও বেশি খাবে। অফিসে যাওয়া আসার কাজে বাইক ব্যবহার করতে চাইলে ১৩০-১৫০ সিসির বাইক যথেষ্ট।
যেকোনো বাইক কেনার আগে, আপনার আসে পাশে, সেই বাইকের সার্ভিস সেন্টার আছে কি না, সেটা দেখে নিন। বাইকের নিয়মিত সার্ভিসিং না করালে, সেই বাইকের কার্যকারী ক্ষমতাও কমে যায়। তাছাড়া যদি এমন বাইক কিনেন যেটার সার্ভিস সেন্টার আসে পাশে কোথাও নেই, তাহলে কোন ভাবে বাইকের ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা ঠিক করাতে আপনাকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। তাই এমন বাইক পছন্দ করুন যেটার সার্ভিস স্টেশন বা সার্ভিস সেন্টার আপনার আশে-পাশেই রয়েছে।
বাইক লম্বা সময় চালালে, তার বিভিন্ন পার্টসের ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক সেক্ষেত্রে এমন বাইক ক্রয় করুন যেটার স্পেয়ার পার্টস সব জায়গায় পাওয়া যায় এবং যেটার দামও কম। যাতে প্রয়োজনে বাইকটি সহজেই ঠিক করা যায়।
এমনও হতে পারে যে আপনি একটি লোকাল শো-রুম থেকে ইয়ামাহার কোন বাইক কিনেছেন, কিন্তু এটা ইয়ামাহার কোন শো-রুম নয়, বরং আপনাকে তারা নষ্ট বা নকল বাইক ধরিয়ে দিল, সেক্ষেত্রে আপনি ইয়ামাহার কাছেও অভিযোগ করতে পারবেন না। অন্যদিকে যে-সব শো-রুম অথেনটিক এবং ইয়ামাহা থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত তারা বাধ্য আপনাকে সঠিক মানের এবং সঠিক বাইক প্রদান করতে। সেক্ষেত্রে বাইক ক্রয় করার পড়ে কোনো অভিযোগ থাকলে আপনি সরাসরি ইয়ামাহার কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। তাই অথেনটিক শো-রুম থেকেই বাইক ক্রয় করুন।
মূলকথা; একটি বাইক শুধু মাত্র একটি যানবাহন না, এটি একটি আবেগ তাই সেটা ইয়ামাহা হোক কিংবা অন্য কোন বাইক, সেটা ক্রয় করার আগে অবশ্যই উপরে উল্লিখিত সকল তথ্য এবং যাচাই বাছাই করার পরেই বাইকটি ক্রয় করুন।