বাইক কেনার পর আমরা কিছু কিছু মানুষ এটিকে আরও আকর্ষনীয় করে তোলার কথা চিন্তা করে থাকি। আবার অনেক সময় বাইকেরে অনেক কিছু পরিবর্তন করেও থাকি। মেইনটেন্যান্স বা মেরামতের স্বার্থে ছোট খাটো কিছু পরিবর্তন করা গেলেও বড় ধরনের পরিবর্তন করা আইন সংগত নয়। আজ আমরা জানব একটা বাইকে যেই পরিবর্তন গুলি বেআইনি এবং নিষিদ্ধ সে সম্পর্কে।
বাইক কেনার পর আমরা অনেকেই তার বর্ণ, ইঞ্জিনের সিলিন্ডার থেকে যে পাইপটা যুক্ত হয় , মাথার লাইট পরিবর্তন করে থাকি । এতে হয়তোবা আমাদের বাইকটি আগের চাইতে বেশি দৃষ্টিনন্দন হতে পারে। কিন্তু এই পরিবর্তন আমাদের জন্য ঝুকির কারন হয়ে দাঁড়ায়। কারন এই ধরনের পরিবর্তন ট্রাফিক আইনের বিরধি।। এর জন্যে আমারা মামলা এবং জরিমানার আইনের আওতায় পাড়তে পারি।
ট্রাফিক আইনে নিষিদ্ধ যেই পরিবর্তন গুলি আমরা বাইকে করে থাকি তাতে আমাদের মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে। আমরা যখন ট্রাফিক আইনের সম্মুখিন হয় তখন আমাদের এই পরিবর্তন গুলি আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হয়। পাশাপাশি জরিমানাও দিতে হয়। তাই বাইক পরিবর্তন করার চিন্তা থাকলে তা এখনি মাথা থেকে বের করাই ঊত্তম।
আমরা অনেকেই আমাদের বাইকের সাইলেন্সার পরিবর্তন করে থাকি। কোম্পানি থেকে যে সাইলেন্সার দেয়া হয় বাইকের সাথে তা পরিবর্তন করে উচ্চ শব্দের সাইলেন্সার ব্যবহার করে থাকি। এসব উচ্চস্বরের সাইলেন্সার থেকে যে শব্দদূষণ তৈরী হয় তা ট্রাফিক আইন লংঘনের করে । তাই সাইলেন্সার পরিবর্তনের মাধ্যমে বাইক পরিবর্তন করা থেকে বিরত থাকতে হবে আমাদের।
আমরা অনেক সময় বাইকের নম্বর প্লেটে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করি নিজের ইচ্ছে মত , যেটা সম্পূর্ন আইন পরিপন্থি। প্রতিটা গাড়ির নম্বর প্লেট তৈরী করার সময় নির্দিষ্ট বিধিমালা অনুসরন করা হয়। এই বিধিমালা অমান্য করে নম্বর প্লেট এর ধরন পরিবর্তন করলে নানা রকমের আইনি জটিলতায় পড়তে হয়। তাই নম্বর প্লেট এর ফ্রন্ট, বর্ণ এমনকি ডিজাইন পরিবর্তন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাইকের রঙ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়। তবে এই কাজটি করতে নিরুতসাহিত করা হয়ে থাকে। করন চুরি হওয়া বাইক সাধারনত রঙ পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় বিক্রি করা হয়ে থাকে। তাছাড়া বাইক কেনার সময় ডকুমেন্টস হিসেবে যেই কাগজ দেয়া হয় সেটাতে রঙের বিষয়টি উল্লেখ থাকে। তাই রঙ পরিবর্তন না করাই ভালো।
বিআরটিএ’র সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮
এবারে বিআরটিএ’র সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ তে বর্ণিত এসব নীতিমালা ও বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দেওয়া যাক।
২০১৮ সালের নতুন আইনের অনুসারে বাইকের বেশ কিছু টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন বা প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বাইকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, সিট সংখ্যা, চাকার ভিত্তি বা বেস, চাকার আকার ও অবস্থান, ইন্ডিকেটর লাইট, ব্রেক, গিয়ার, এক্সস্ট বা ধোঁয়া নির্গমন ব্যবস্থা, ইত্যাদি যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা যাবে কি যাবে না, তা নিয়ে অনেক নির্দেশনা রয়েছে।
কিন্তু বাইকের মূল কিছু বিষয় পরিবর্তনশীল হবেনা। তবে বিআরটিএ’র অধ্যাদেশ ও শর্ত মেনে দরখাস্ত করে আপনি বাইকের ভিতরের ও বাইরের বেশ কিছু মডিফিকেশন করতে পারবেন।
লক্ষণীয় যে রেজিস্ট্রেশনের সময় বিআরটিএ’র কারিগরি বিনির্দেশের মধ্যে যেসব প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলোর উল্লেখ আছে, সেগুলোর মধ্যে আপনি যে কোনো পার্টসই পরিবর্তন বা প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আলাদা কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবেনা।
প্রথমত বাইকের হেডলাইটের ভেতরে কোম্পানি প্রদত্ত যে লাইটটি থাকে, সেটি মূলত হ্যালোজেন লাইট। এটি পরিবর্তন করে আপনি এলইডি লাইট ব্যবহার করতে পারেন।
এতে কোনো সমস্যা হবেনা। হেডলাইটের পাশে সাধারণত যে ছোটো ডিআরএল লাইট থাকে সেগুলোর রঙও আপনি কোনো সমস্যা ছাড়া পরিবর্তন করতে পারেন। হেডলাইটের উপরে যে ভাইজর প্লেটটি থাকে সেটিও আপনি সঠিক ফিটিং করিয়ে পরিবর্তন করতে পারবেন।